একুশে সিলেট ডেস্ক
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে হার্ডলাইনে যাওয়ার ঘোষণা সরকারের দেশের বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দামে অস্থিরতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটে বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাছাড়া, টানা দুই দফায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বন্যায় কাঁচা সবজির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে আলু, চাল ও ডিমের মতো অতি প্রয়োজনীয় পণ্যে মোটা অঙ্কের মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এবার অস্থিতিশীল বাজারের লাগাম টানতে দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে হার্ডলাইনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
পৃথক দুই অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে। পাশাপাশি বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা সিন্ডিকেট কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করা হবে।
বিএসআরএফ সংলাপে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উপদেষ্টা আসিফ বলেন, একের পর এক অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করছি। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। বন্যায় অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে, যে কারণে শাক-সবজির দাম বেশি। কিন্তু অন্যান্য পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে এখানে সিন্ডিকেটের একটা বড় প্রভাব আছে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য আমরা কাজ করছি। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনকে দুর্বল করা হয়েছে। কর্পোরেটদের সঙ্গে আগের সরকারের একটা যোগাযোগ থাকার কারণে এটাকে এত দুর্বল করা হয়েছে যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রতিবেদন আসে যে অভিযান হলো; সেখানে ৩ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা জরিমানা। এটাতো ইফেক্টিভ না।
তিনি আরও বলেন, আগে যেমন ছিল ওনাদের একটা জেল দেওয়ারও ক্ষমতা ছিল আইনে। ব্যাপারগুলোকে এমনভাবে নষ্ট করা হয়েছে এটা টাইম নেবে একটু, আইন সংশোধন করা শক্তিশালী করা। কিন্তু এর আগে আমরা ভাবছি যে আমাদেরকে তো হার্ডলাইনে যেতে হবে। না হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের বিষয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, আগে যে সিন্ডিকেট ছিল, সেটা আওয়ামী লীগ সরকার নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু সিন্ডিকেটের ভেতরে তো ব্যবসায়ীরাই বসেছিলেন। তারা এখনও রয়ে গেছে। তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ বাঁচাতে কোনো কোনো রাজনীতিবিদের সঙ্গে লিয়াজোঁর মাধ্যমে সিন্ডিকেট টিকিয়ে রেখেছেন। সেক্ষেত্রে আমরা শনাক্ত করছি। সেটা অ্যাডজাস্ট করার চেষ্টা করছি।
এদিকে ‘কৃষি পণ্য ওএমএস কর্মসূচি ২০২৪-এর উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এ সময় অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় নিম্ন আয়ের লোকের জন্য সরকার ভর্তুকিতে কৃষিপণ্য ও সবজি বিক্রয় করবে। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ কিনে তা ওএমএসর মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
Leave a Reply